Skip to main content

অশ্বমেধ যজ্ঞ

অশ্বমেধ হল বৈদিক ধর্মেরসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজকীয় যজ্ঞ অনুষ্ঠানগুলির একটি। যজুর্বেদে এই অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বর্ণনা আছে। শতপথ ব্রাহ্মণেও এই যজ্ঞের উল্লেখ আছে। ঋগ্বেদের ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, বৈদিক যজ্ঞসম্পাদনা শুধুমাত্র রাজারাই অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করতে পারতেন। ক্ষমতা ও গৌরব অর্জনের জন্য এই যজ্ঞের আয়োজন করা হত। প্রতিবেশী রাজ্যের সার্বভৌমত্ব হরণ ও নিজের রাজ্যের সামগ্রিক সমৃদ্ধি এই যজ্ঞের অন্যতম কারণ ছিল।

অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়াটিকে হতে হত একটি সক্ষম পুরুষ ঘোড়া। ঘোড়াটির বয়স ২৪ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে হতে হত। ঘোড়াটির গায়ে জল ছিটিয়ে তার কানে মন্ত্রোচ্চারণ করা হত। ঘোড়াটির পথ আটকানো ছিল পাপ। তারপর ঘোড়াটিকে উত্তর-পূর্ব দিকে ছেড়ে দেওয়া হত। এক বছর (কোনো কোনো টীকাকারের মতে দেড় বছর) ঘোড়াটি ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরা করত। ঘোড়াটির সঙ্গে সূর্যের বার্ষিক গতির সম্পর্ক দেখানো হত।

এক বছর প্রতিবেশী রাজ্যগুলির মধ্যে কোনো রাজা যদি যজ্ঞকারীর ঘোড়াটিকে আটকাতো, তবে তাকে যজ্ঞকারীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হত। এক হাজার যুবক ঘোড়াটির সঙ্গে যেত। এরা ছিল রাজসভার সদস্য বা সামন্তরাজাদের পুত্র। ঘোড়ার অনুপস্থিতিতে যজ্ঞকারীর বাড়িতে নীরবিচ্ছিন্ন অনুষ্ঠান চলত।

ঘোড়াটি ফিরে এলে আরও কয়েকটি অনুষ্ঠান পালন করা হত। ঘোড়াটিকে অন্যান্য ঘোড়ার সঙ্গে একটি রাজকীয় রথে জুড়ে দিয়ে ঋগ্বেদের স্তোত্র পাঠ করা হত। তারপর ঘোড়াটিকে জলে নিয়ে গিয়ে স্নান করানো হত। যজ্ঞকারী ঘোড়াকে আগের রাতের অবশিষ্ট শস্যদানা খেতে দিতেন।
(সংগৃহীত)

Comments

Popular posts from this blog

আদি সমাজতন্ত্র বাদী বা কাল্পনিক সমাজতন্ত্র লেখক- সুমন্ত ঘোষ

সমাজতন্ত্রবাদ একটি বিশেষ অর্থনৈতিক মতবাদ শিল্প বিপ্লবের প্রসারের সাথে সাথে বিভিন্ন দেশে কয়েকজন খ্যাতনামা সমাজতান্ত্রিক এর আবির্ভাব হয় । এই সমস্ত সমাজতান্ত্রিক কল্পনা করেছিলেন এমন এক সমাজ ব্যবস্থার যেখানে সকলেই নিজ নিজ যোগ্যতা অনুসারে কাজ করবে এবং সকলের শ্রম থেকে পাওয়া আয় সকলের মধ্যে ন্যায্যভাবে বন্টন করা হবে। মূলত এই মতবাদ প্রচলিত গণতন্ত্রবাদের মূলে কুঠারাঘাত করে যৌথ বা সামাজিক নিয়ন্ত্রণ এর ভিত্তিতে নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পথ নির্দেশ করে সেটাই সমাজতন্ত্রবাদ । সমাজতন্ত্রবাদীদের মধ্যে তত্ত্বগত মতভেদ আছে। মাক্স পূর্ববর্তী সমাজতন্ত্রবাদীদের আদি সমাজতন্ত্র বাদী বলা হয়। যাদের utopian বা অবাস্তব আদর্শবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই আদি সমাজতন্ত্রবাদীদের মধ্যে একজন ছিলেন ইংল্যান্ডের রবার্ট ওয়েন। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন ম্যানচেস্টারের একটি কাপড়ের কলের ম্যানেজার। ম্যানেজার হিসেবে তিনি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দেন। কিন্তু factory প্রথার যাবতীয় কুফল দেখে তিনি শ্রমিকশ্রেণীর উন্নতি সাধনে তার জীবনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেন। নিউ ল্যানার্কে একটি আদর্শ শিল্পনগর স্থাপন করে শ্রমিক সাধারণের সর্বপ্রক...

কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসে শর্ট প্রশ্ন

১   ) হিট্রো - গ্রাফি   কথার   অর্থ   কি                                                                         উত্তরঃইতিহাস   চর্চা ২ )  ইতিহাসের   জনক কাকে বলে                                                                        উত্তরঃহেরোডোটাস ...

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব কতটা 'বৈপ্লবিক' ছিল? লেখক: সুমন্ত ঘোষ

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব যে কত দূর পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মূলত এই সময় মানুষের সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনা ও অনুসন্ধিতসা সত্বেও বিজ্ঞানচেতনা যে সবক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে পেরেছিল তা বলতে একটু দ্বিধা বোধ হয়। কারণ এইসময় বৈজ্ঞানিকগন জগৎ ও বিশ্বভ্রম্মান্ড নিয়ে আলোচনা করলেও তারা সেগুলির যুক্তি পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে অনেক সময় অক্ষম হতেন। তবে উল্লেখ করা দরকার গ্যালিলিও, কোরারনিকাস- এ সম্বন্ধে কিছু যুক্তি পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে অবশ্যই সক্ষম হয়েছিলেন।  বৈজ্ঞানিক বিপ্লব 'বৈপ্লবিক' পর্যায়ে রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমরা আরেকটা বাধা লক্ষ্য করতে পারি, সেটা হলো বৈজ্ঞানিকগণের অনেকাংশই জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর গুরুত্বারোপ করত। তারা মনে করত জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান ছিল প্রায় সমর্থক। মূলত এই ধারণাই বৈজ্ঞানিক বিপ্লবকে বৈপ্লবিক ধারায় রূপান্তরের পরিপন্থী ছিল। তবে এক্ষেত্রে আমরা একজন ব্যতিক্রমী মনীষীকেউ দেখতে পারি যিনি তার আবহাওয়া সংক্রান্ত তত্ত্ব দ্বারা এই ভ্রান্ত জ্ঞান অর্থাৎ জ্যোতিষশাস্ত্রের অসারতার দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করেছিলেন। ইনি আর কেউ নন, ইনি হলেন রেনেসাঁ...