চন্দ্র পঞ্জিকা
চন্দ্র পঞ্জিকা হলো এমন একটি পঞ্জিকা (ক্যালেন্ডার) যেখানে দিনসমূহকে হিসাব করার জন্য চাঁদের ঘুর্ণন পদ্ধতির ফলে উদ্ভূত গণনাকে ব্যবহার করা হয়। হিসাবের অসুবিধার্থে পৃথিবীতে চন্দ্র পঞ্জিকার ব্যবহার কম; তবে ধর্মীয় ক্ষেত্রে এর প্রচলণ অধিক; যেমনঃ হিজরি পঞ্জিকা।
প্রাথমিকভাবে বর্ষ গণনা করা হতো চাঁদের আবর্তন হিসাব করে, সুমেরীয় সভ্যতায় যা প্রথম দৃষ্ট হয়; কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞান, হিসাব-নিকাশ প্রভৃতিতে অগ্রগামী থাকায় মিশরীয়রাই পৃথিবীতে প্রথম সৌর পঞ্জিকার প্রচলন করে।
সৌর পঞ্জিকা
সৌর পঞ্জিকা হলো একটি ক্যালেন্ডার। সৌর পঞ্জিকা মতে, সৌর-বৎসর ১২টি ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগ মাস নামে অভিহিত হয়ে থাকে। দিনের বিচারে এই মাসগুলো সমান নয়। বিভিন্ন পঞ্জিকাতে প্রতিটি মাস নির্ধারিত হয়, বিভিন্ন দিনমানে। তবে সাধারণভাবে একে ৩০ দিনকে গড় মান ধরা হয়। বর্তমানে অধিকাংশ সৌর-পঞ্জিকা মতে সৌর-বৎসরের মাসগুলো হয়, ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ দিনে কিন্তু সকল সৌরপঞ্জিকাতে একই নিয়মে হয় না। হিসাবের সুবিধার্থে পৃথিবীতে সৌর পঞ্জিকার ব্যবহারই অধিক প্রচলিত; যেমনঃ ইংকেজি পঞ্জিকা, বাংলা পঞ্জিকা। সৌর পঞ্জিকার ভিত্তি হলো পৃথিবীর আহ্নিক গতির সময়কাল এবং বার্ষিক গতির সময়কাল।
কয়েকটি সৌর পঞ্জিকার উদাহরণ হলোঃ
১) বঙ্গাব্দ - বঙ্গাব্দ, বাংলা সন বা বাংলা বর্ষপঞ্জি হল বঙ্গদেশের একটি ঐতিহ্য মণ্ডিত সৌর পঞ্জিকা ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি।
২) জুলিয় বর্ষপঞ্জি - জুলিয়ান বর্ষপঞ্জী খৃষ্টপূর্ব ৪৬ খ্রিষ্টাব্দে জুলিয়াস সিজার কর্তৃক প্রবর্তিত একটি ঐতিহ্যবাহী সৌর ক্যালেন্ডার।
৩) গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী - গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী, গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জী, পাশ্চাত্য বর্ষপঞ্জী, ইংরেজি বর্ষপঞ্জি বা খ্রিস্টাব্দ হল আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় সর্বত্র স্বীকৃত একটি সৌর বর্ষপঞ্জী, যা বিভিন্ন সময় ধাপে ধাপে উন্নয়নের ফলে বর্তমান রুপে আবির্ভূত হয়েছে।
৪) থাই (শ্যামদেশীয়) সৌর বুদ্ধাব্দ - থাইল্যান্ডে প্রচলিত সৌর ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি বুদ্ধাব্দ নামেই পরিচিত, যাতে সূর্যের একেকটি রাশিতে অবস্থানের উপর ভিত্তি করে একেকটি মাস গণিত হয়।
৫) ইরানি বর্ষপঞ্জী - ইরানি বর্ষপঞ্জী অথবা পারস্য বর্ষপঞ্জী হল বৃহত্তর ইরানে প্রায় দুই সহস্রাব্দব্যাপী প্রচলিত বর্ষপঞ্জী, যাতে বছর শুরু হয় ইরানি সময়ানুসারে গণিত মহাবিষুবের দিনে।
৬) বাইজেন্টাইন বর্ষপঞ্জী - বাইজেন্টাইন বর্ষপঞ্জী হল ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চ কর্তৃক ব্যবহৃত একটি সৌর ভিত্তিক পঞ্জিকা, যা কনস্টান্টিনোপল সৃষ্টির যুগ(Creation Era of Constantinople) বা বিশ্ব এর যুগ (Era of the World) নামে পরিচিত।
৭) শকাব্দ - শকাব্দ (অথবা শালীবাহনাব্দ) হল ভারতীয় উপমহাদেশে বহুলপ্রচলিত এক প্রাচীন সৌর অব্দ।
***এই ব্লগ পত্রিকায় লেখা পাঠানোর জন্য ও পুরষ্কার সংক্রান্ত নির্দেশনামার জন্য ক্লিক করুন:
Comments
Post a Comment