“হেমলক” শব্দটির সাথে আমারা সবাই পরিচিত । “হেমলক গাছের”
কিছু তথ্য আমার জানা ছিল না। যারা জানেন তাদের কে শুভেচ্ছা আর
যারা আমার মত “নতুন জান্তা পাটি” তাদের কে বলছি একটু কষ্ট করে
আমার লেখা ইতিহাসটা পড়তে পারেন। যদি নতুন কিছু জানা যাই সেই আশায়।
কিছু তথ্য আমার জানা ছিল না। যারা জানেন তাদের কে শুভেচ্ছা আর
যারা আমার মত “নতুন জান্তা পাটি” তাদের কে বলছি একটু কষ্ট করে
আমার লেখা ইতিহাসটা পড়তে পারেন। যদি নতুন কিছু জানা যাই সেই আশায়।
হেমলকের বৈজ্ঞানিক নাম: Conium maculatum.
ক্রম: Apiales
পরিবার: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
বংশের শাখা: Apioideae
সদয়: Conium
প্রজাতি: C. maculatum
ক্রম: Apiales
পরিবার: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
বংশের শাখা: Apioideae
সদয়: Conium
প্রজাতি: C. maculatum
আইরিশরা হেমলক গাছকে ডাকে “Devil's Bread” নামে, মানে শয়তানের পাউরুটি বা "Devil's Porridge" মানে শয়তান এর জাউ।
হেমলক দ্বিবর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। পাঁচ থেকে আট ফুট লম্বা হয়। গাছে ছোট ছোট সাদা রঙের ফুল ফোটে। ভেজা, স্যাঁতসেঁতে জায়গায় এদের জন্মে। নালার কাছে, নদীর ধারে এদের বেশি দেখা যায়। ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, উত্তর আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে হেমলক বেশি জন্মে।
হেমলক গাছ সবটাজুড়েই (পাতা, ফুল, ফল, কাণ্ড, শিকড়) ছড়িয়ে আছে কোনিইন (Coniine) নামের এক ধরনের নিউরোটক্সিন বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান। কোনিইন হচ্ছে বিষাক্ত অ্যালকালয়েড। এর রাসায়নিক সংকেত C8H17N.সাধারণ ভাষাই কোনিইন নিউরোটক্সিন জাতীয় বিষ। এটি আক্রান্ত প্রাণীর দেহের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং প্যারালাইসিস তৈরি করে। কোনিইন মূলত প্রাণীদেহের ‘নিউরো-মাসকুলার জাংশন’-কে ব্লক করে দেয়। যে সব তন্তু স্নায়ুর সাথে পেশীর সংযোগ স্থাপন করে সেগুলোকে নিউরো-মাসকুলার জাংশন বলে। নিউরো-মাসকুলার জাংশন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় স্নায়ুর সাথে পেশীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শ্বাসযন্ত্রও নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ফলে হৃদপিন্ড ও মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ না হওয়ায় আক্রান্ত প্রাণী দ্রুত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
বিষাক্ত হেমলক গাছ মানুষসহ অন্য যে কোনো প্রাণীর জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশেষ করে তৃণভোজী প্রাণী ও বীজ ভক্ষণকারী পাখিরা হেমলকের বিষে আক্রান্ত হয়ে অনেক সময়ই মারা যায়। হেমলকের ছয় থেকে আটটি পাতায় যে পরিমাণ বিষ আছে তা কোনো মানুষের দেহে প্রবেশ করানো হলে মৃত্যু অনিবার্য!
সক্রেটিসের মৃত্যু:
কমবেশি সবাই জানে হেমলক এর বিষ পান করে মৃত্যু হয় “গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস” এর। পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯ সালে। মহান শিক্ষক ও গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসকে প্রহসনের বিচারে দেয়া হয় মৃত্যুদন্ড! রায়ে বলা হয়, “মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে হেমলক বিষ পান করিয়ে”।
মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার দিন, সক্রেটিসের হাতে তুলে দেয়া হয় “এক পেয়ালা হেমলক বিষ”। সক্রেটিসকে বলা হয়, পেয়ালার বিষ পুরোটুকু পান করতে হবে। এক ফোঁটা বিষও যাতে পেয়ালার বাইরে না পড়ে। সক্রেটিস ধীরস্থিরভাবে এক চুমুকে সবটুকু বিষ পান করেন। এবার সক্রেটিসকে নির্দেশ দেয়া হল, রুমের ভেতরে হাঁটাহাঁটি করার জন্য, যাতে করে বিষ সমস্ত শরীরে ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সক্রেটিস কিছুক্ষণ পায়চারি করলেন। তার পা দুটি অবশ হয়ে আসতে লাগলো। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো। সারা দেহ অবশ হয়ে কিছু সময়ের মাঝেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।
ইংরেজ কবি John Keats তার ‘Ode to a Nightingale’ কবিতায় হেমলকের কথা উল্লেখ করেছেন (হয়তো সক্রেটিসের কথা মনে করে)-
"My heart aches, and a drowsy numbness pains
My sense, as though of hemlock I had drunk"
My sense, as though of hemlock I had drunk"
লেখক: অর্বাচীন পথিক ( সংগৃহীত )
Comments
Post a Comment