Skip to main content

***ঘসেটি বেগম ***














































ঘসেটি বেগম নওয়াব আলীবর্দী খান-এর জ্যেষ্ঠা কন্যা। আসল নাম মেহেরুন্নেসা। নওয়াব আলীবর্দী খান তাঁর তিন কন্যাকে তাঁর বড়ভাই হাজী আহমদের তিন ছেলের সাথে বিবাহ দেন। ঘসেটি বেগমের বিবাহ হয়েছিল নওয়াজিস মুহম্মদ শাহমাত জং-এর সাথে এবং তাঁকে (শাহমাত জংকে) ঢাকার নায়েব নাজিম নিযুক্ত করা হয়েছিল। আলীবর্দী খানের কন্যা তার মর্যাদার প্রভাব প্রয়োগ করে প্রচুর ধন সম্পদ সঞ্চয় করেন। নিঃসন্তান নওয়াজিস-ঘসেটি দম্পতি সিরাজউদ্দৌলার কনিষ্ঠ ভাই ইকরামউদ্দৌলাকে পালক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে ইকরামউদ্দৌলার মৃত্যু হয় এবং তার মৃত্যুর পর নওয়াজিস অল্প কিছুদিন জীবিত ছিলেন। ঘসেটি বেগম তার স্বামীর বিপুল ধনসম্পদের মালিকানা লাভ করেন। পূর্বেকার সঞ্চিত ধনসম্পদসহ উত্তরাধিকারসূত্
রে প্রাপ্ত তার ধন সম্পদ তিনি মতিঝিল প্রাসাদে সঞ্চিত করেন।
বৃদ্ধ নওয়াব তাঁর কনিষ্ঠা কন্যার পুত্র সিরাজউদ্দৌলাকে তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করলে ঘসেটি বেগম এ 

মনোনয়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন এবং সিরাজউদ্দৌলার পরিবর্তে তার দ্বিতীয় বোনের পুত্র শওকত জংকে সিংহাসনে বসানোর জন্য চেষ্টা করেন। মাতামহের মৃত্যুর পর সিরাজ মসনদে আরোহণ করেন এবং অনতিবিলম্বেই তিনি ঘসেটি বেগমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাস্বরূপ তাঁকে প্রাসাদে অবরুদ্ধ করেন। সিরাজউদ্দৌলা রাজবল্লভের কাছ থেকেও ঢাকার কোষাগারের একটি বিবরণ চান। কিন্তু রাজবল্লভ সঠিক বিবরণ দিতে ব্যর্থ হন। তাঁর পুত্র কৃষ্ণবল্লভ পালিয়ে কলকাতায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি-র ফোর্ট উইলিয়ম-এ আশ্রয় নেন। কৃষ্ণবল্লভকে তাঁর নিকট হস্তান্তর করার জন্য নওয়াব কলকাতার ইংরেজ গভর্নর রজার ড্রেক-এর নিকট পত্র প্রেরণ করেন।
আলীবর্দীর প্রধান সেনাপতি মীরজাফর ও সিরাজউদ্দৌলার মসনদ লাভে স্বস্তি বোধ করেন নি। ঘসেটি গোপনে মীর জাফরের সাথে মিত্রতা গড়ে তোলেন। সিরাজের বিরুদ্ধে চক্রান্তের স্বার্থে তিনি প্রচুর অর্থ প্রদান করেছেন। ব্যবসায়ী জগৎ শেঠ এবং উমিচাঁদ, ঘসেটি ও মীরজাফরের সাথে ষড়যন্ত্রে যোগ দেন। এ সকল ষড়যন্ত্রকারীর অভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল নওয়াবকে উচ্ছেদ করা। পলাশীর যুদ্ধের পর সিরাজউদ্দৌলা নিহত হন এবং ইংরেজদের দ্বারা মীর জাফর বাংলার নওয়াব হন। মীর জাফর মুর্শিদাবাদে প্রথমেই পরাজিত নওয়াবের মাতা আমিনা বেগমসহ ঘসেটি বেগমকে বন্দি করেন। অতঃপর তাদের ঢাকায় সরিয়ে নেন এবং ঢাকার জিনজিরা প্রাসাদে অন্তরীণ করে রাখেন। মীর জাফরের পুত্র মীরন ঘসেটি বেগমকে বন্দি অবস্থায়ও বিপজ্জনক শত্রু বলে বিবেচনা করেন। মীরন ঘসেটি বেগম ও আমিনা বেগমকে মুর্শিদাবাদে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কথিত আছে যে, উভয়েরই বুড়িগঙ্গা নদীতে সলিল সমাধি ঘটে।
সুত্র: banglapedia





















































Comments

Popular posts from this blog

আদি সমাজতন্ত্র বাদী বা কাল্পনিক সমাজতন্ত্র লেখক- সুমন্ত ঘোষ

সমাজতন্ত্রবাদ একটি বিশেষ অর্থনৈতিক মতবাদ শিল্প বিপ্লবের প্রসারের সাথে সাথে বিভিন্ন দেশে কয়েকজন খ্যাতনামা সমাজতান্ত্রিক এর আবির্ভাব হয় । এই সমস্ত সমাজতান্ত্রিক কল্পনা করেছিলেন এমন এক সমাজ ব্যবস্থার যেখানে সকলেই নিজ নিজ যোগ্যতা অনুসারে কাজ করবে এবং সকলের শ্রম থেকে পাওয়া আয় সকলের মধ্যে ন্যায্যভাবে বন্টন করা হবে। মূলত এই মতবাদ প্রচলিত গণতন্ত্রবাদের মূলে কুঠারাঘাত করে যৌথ বা সামাজিক নিয়ন্ত্রণ এর ভিত্তিতে নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পথ নির্দেশ করে সেটাই সমাজতন্ত্রবাদ । সমাজতন্ত্রবাদীদের মধ্যে তত্ত্বগত মতভেদ আছে। মাক্স পূর্ববর্তী সমাজতন্ত্রবাদীদের আদি সমাজতন্ত্র বাদী বলা হয়। যাদের utopian বা অবাস্তব আদর্শবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই আদি সমাজতন্ত্রবাদীদের মধ্যে একজন ছিলেন ইংল্যান্ডের রবার্ট ওয়েন। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন ম্যানচেস্টারের একটি কাপড়ের কলের ম্যানেজার। ম্যানেজার হিসেবে তিনি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দেন। কিন্তু factory প্রথার যাবতীয় কুফল দেখে তিনি শ্রমিকশ্রেণীর উন্নতি সাধনে তার জীবনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেন। নিউ ল্যানার্কে একটি আদর্শ শিল্পনগর স্থাপন করে শ্রমিক সাধারণের সর্বপ্রক...

কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসে শর্ট প্রশ্ন

১   ) হিট্রো - গ্রাফি   কথার   অর্থ   কি                                                                         উত্তরঃইতিহাস   চর্চা ২ )  ইতিহাসের   জনক কাকে বলে                                                                        উত্তরঃহেরোডোটাস ...

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব কতটা 'বৈপ্লবিক' ছিল? লেখক: সুমন্ত ঘোষ

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব যে কত দূর পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মূলত এই সময় মানুষের সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনা ও অনুসন্ধিতসা সত্বেও বিজ্ঞানচেতনা যে সবক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে পেরেছিল তা বলতে একটু দ্বিধা বোধ হয়। কারণ এইসময় বৈজ্ঞানিকগন জগৎ ও বিশ্বভ্রম্মান্ড নিয়ে আলোচনা করলেও তারা সেগুলির যুক্তি পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে অনেক সময় অক্ষম হতেন। তবে উল্লেখ করা দরকার গ্যালিলিও, কোরারনিকাস- এ সম্বন্ধে কিছু যুক্তি পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে অবশ্যই সক্ষম হয়েছিলেন।  বৈজ্ঞানিক বিপ্লব 'বৈপ্লবিক' পর্যায়ে রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমরা আরেকটা বাধা লক্ষ্য করতে পারি, সেটা হলো বৈজ্ঞানিকগণের অনেকাংশই জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর গুরুত্বারোপ করত। তারা মনে করত জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান ছিল প্রায় সমর্থক। মূলত এই ধারণাই বৈজ্ঞানিক বিপ্লবকে বৈপ্লবিক ধারায় রূপান্তরের পরিপন্থী ছিল। তবে এক্ষেত্রে আমরা একজন ব্যতিক্রমী মনীষীকেউ দেখতে পারি যিনি তার আবহাওয়া সংক্রান্ত তত্ত্ব দ্বারা এই ভ্রান্ত জ্ঞান অর্থাৎ জ্যোতিষশাস্ত্রের অসারতার দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করেছিলেন। ইনি আর কেউ নন, ইনি হলেন রেনেসাঁ...