Skip to main content

Posts

Showing posts from February, 2018

বিশেষ ঘোষণা

১লা মার্চে আমাদের পত্রিকার একটি সংখ্যা প্রকাশিত হবার দরুন এখন নতুন লেখা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। পাঠকবর্গের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ নতুন লেখা পাওয়ার জন্য আপনারা ১লা মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আমরা মার্চ সংখ্যার PDF ও তৈরি করছি আপনাদের সুবিধার্থে। আপনারা ওটা সংগ্রহ করে নেবেন।     - সুমন্ত ঘোষ(সম্পাদক)

ইতিহাসে মাৎস্যন্যায় লেখক: এ.এম.চৌধুরী

মাৎস্যন্যায়  রাজা শশাঙ্ক এর মৃত্যুর পর থেকে পাল রাজবংশের অভ্যুদয়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে বাংলার রাজনীতিতে চরম বিশৃঙ্খলাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে। প্রায় সমসাময়িক লিপি, খালিমপুর তাম্রশাসন এবং সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতম কাব্যে পাল বংশের অব্যবহিত পূর্ববর্তী সময়ের বাংলার নৈরাজ্যকর অবস্থাকে ‘মাৎস্যন্যায়ম্’ বলে উল্লেখ করা হয়। শশাঙ্কের (৬০০-৬২৫ খ্রি) মৃত্যুর পর বঙ্গে (গৌড়-বাংলায়) বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা দেয়। হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর (৬৪৬/ ৬৪৭ খ্রিস্টাব্দ) পর তাঁর সাম্রাজ্যেও নৈরাজ্য ও সংশয় দেখা দিলে, মন্ত্রীরা বলপূর্বক রাজ্য দখল করে নেয়। আনুমানিক ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এক শতক কালেরও বেশি সময় ধরে গৌড়ের ইতিহাস অস্পষ্ট ছিলো। চৈনিক দূত ওয়াং-হিউয়েন্-সের হঠকারিতায় তিববতের ক্ষমতাধর রাজা শ্রং-ছান-গেমপো বাংলায় পরপর কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন। সাত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলায় দুটি নতুন রাজবংশ আত্মপ্রকাশ করে:গৌড় ও মগধে (পশ্চিম বাংলা ও দক্ষিণ বিহার) পরবর্তী গুপ্তগণ এবং বঙ্গ ও সমতট (দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা) খড়গ রাজবংশ। কিন্তু এ রাজবংশের কোনোটিই বাংলায় ঐক্যব...

সর্বকালের একটি নাম করা চলচিত্রের ইতিহাস (পর্ব-১) : মাদার ইন্ডিয়া

'সিনেমার শুটিং চলছে একটি গ্রামের ভিতর। খড়ের গাদায় আগুন লেগেছে। জ্বলছে পুরো গ্রাম। সেই আগুনের ভিতর দিয়ে ছুটে আসছেন সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী।' - ক্যামেরায় যখন এই দৃশ্য ধারণ হচ্ছে তখন হঠাৎ করেই বাতাসের গতি পাল্টে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রধান অভিনেত্রী আটকে পড়েন আগুনের বৃত্তে। হইচই পড়ে যায় ইউনিটে। কেউ সাহস পান না তাকে উদ্ধার করার। এমন সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন ছবিটির অন্যতম প্রধান অভিনেতা। বাঁচান নায়িকাকে। কিন্তু নিজে আহত হন। হাসপাতালে যেতে হয় তাকে। ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবির শুটিংয়ে এই ঘটনা ঘটে। যে সিনেমায় তারা অভিনয় করেছিলেন মা ও ছেলের ভূমিকায়(নার্গিস এবং সুনীল দত্ত)! 'মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৭ সালের ২৫ অক্টোবর। এপিকধর্মী এই ছবিতে অভিনয় করেন নার্গিস, রাজকুমার, সুনীল দত্ত ও রাজেন্দ্রকুমার। ‘বলিউড-মোগল’ মেহেবুব খানের এই ছবি শুধু নার্গিসের ক্যারিয়ারে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজই নয়, হিন্দি ছবির শতবর্ষের ইতিহাসেরও এক মাইলফলক এটি। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দেশপ্রেমমূলক ছবি তৈরির হিড়িক পড়ে বলিউডে। প্রযো...

ইতিহাসে গুগল(Google)

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সার্চ ইঞ্জিন গুগল (Google) সম্পর্কে কম বেশি জানেন না তা তো হবার নয় ৷ হয়তো এই আর্টিকেলটি পড়তেও আপনি গুগল করেই এসেছেন ৷ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন পিএইচডি কোর্সের ছাত্র ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিনের হাতে তাঁদের গবেষণা প্রকল্প হিসেবে গুগলের যাত্রা শুরু হয়েছিল ৷ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল দুই প্রতিষ্ঠাতার অপর একজন বন্ধুর গ্যারেজ থেকে ৷ প্রতিনিয়ত এই সার্চ ইঞ্জিনটি ব্যবহার করে যাচ্ছি আমরা তথ্য খোঁজা থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাজে ৷ আজকে আমরা জানব সেই গুগল সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য যেগুলোর বেশিরভাগ হয়তো আপনি ভাবতেও পারেননি কখনো ৷ তো চলুন একনজরে দেখে নেয়া যাক গুগল সম্পর্কে জানা-অজানা এবং মজার কিছু তথ্য :- ১.  গুগল (Google) নামটির উৎপত্তি হয়েছে মূলত গাণিতিক শব্দ ‘googol’ থেকে যেটির মানে হচ্ছে টেন টু দি পাওয়ার একশো। অর্থাৎ ১ এর পেছনে ১০০ টি ০ থাকবে। ব্যাপারটা এরকম 10,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,­000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,­000,000,000,000,000,000,000,000 ২.  গুগ...

ঐতিহাসিক সরসীকুমার সরস্বতী লেখিকা: ঋতু সাহা

সরসীকুমার  সরস্বতী ( ১৯০৬-১৯৮০)  ভারতীয় শিল্পকলা ও স্থাপত্য শিল্পের একজন ঐতিহাসিক। তিনি রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে এম.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আদি ভারতীয় চারুকলা, বিশেষত ভাস্কর্য, মূর্তিতত্ত্ব এবং স্থাপত্যশিল্প, অধ্যয়নের ব্যাপারে তিনি দুজন অদম্য ও স্থিরসঙ্কল্প ব্যক্তি,  রমাপ্রসাদ চন্দ ও  অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র নিকট থেকে উৎসাহ লাভ করেন। তিনি  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ব-ভারতী উভয় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদানকারী প্রসিদ্ধ শিল্পকলা ইতিহাসবিদ অধ্যাপক স্টেলা ক্রামরিশ কর্তৃকও প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। তিনি বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটিতে গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ প্রতিষ্ঠান বাংলার ইতিহাসের ওপর অনেক পথিকৃৎমূলক গবেষণা প্রকল্প চালু করে। বাংলার আদি শিল্পকলা ও স্থাপত্যশিল্পের নমুনা সম্পর্কে তথ্য আহরণের উদ্দেশ্যে এবং এতদ্সম্পর্কে নতুন কিছু আবিষ্কারের লক্ষ্যে তিনি উত্তরবঙ্গে বেশ কয়েকটি অনুসন্ধাণমূলক ভ্রমণ করেন। এ ভ্রমণের মাধ্যমে তিনি যা কিছু আবিষ্কারে সফল হন সে বিষয়াবলি সম্বলিত রিপোর্টসমূহ...

ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার লেখক- অনিরুদ্ধ রায়(সংগৃহীত লেখা)

১৮৭০ সালের ১০ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংরা উপজেলাধীন কর্চমারিয়া গ্রামে যদুনাথ সরকারের জন্ম। তিনি ছিলেন কর্চমারিয়ার জমিদার রাজকুমার সরকারের পুত্র। ১৮৯১ সালে তিনি ইংরেজি ও ইতিহাসে অনার্সসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৮৯২ সালে এম.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৮৯৭ সালে তিনি  প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৯৩ সালে যদুনাথ ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কলকাতার রিপন কলেজে যোগদান করেন। ১৮৯৮ সালে তিনি প্রাদেশিক শিক্ষা বিভাগে যোগ দেন এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে নিয়োগ লাভ করেন। তাঁর প্রবন্ধ India of Aurangzeb ১৯০১ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯১৭ সালে যদুনাথ বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেন। ১৯১৮ সালে তিনি ভারতীয় শিক্ষা বিভাগের জন্য মনোনীত হন। ইংরেজি ও ইতিহাস দুটি বিষয়ই পড়াবার জন্য তাঁকে কটকের র‌্যাভন’শ কলেজে বদলি করা হয়। ১৯২৬ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করার পর যদুনাথ  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। ১৯২৮ সালের ৭ আগস্ট তাঁকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। যদুনাথ...

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার. লেখক: নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য

রমেশচন্দ্র  মজুমদার  (১৮৮৮-১৯৮০), শিক্ষাবিদ ও বাঙালি ঐতিহাসিক। তিনি ১৮৮৮ সালের ৪ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার খন্দরপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। হলধর মজুমদার এবং বিন্দুমুখীর পুত্র রমেশ চন্দ্র মজুমদার ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। তিনি ১৯০৯ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাস বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক এবং ১৯১১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর অধীনে রমেশচন্দ্রের ঐতিহাসিক গবেষণা শুরু হয়। ‘অন্ধ্র-কুষাণ কাল’ নামক অভিসন্দর্ভের জন্য ১৯১২ সালে তিনি প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯১৩ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় এবং ১৯১৪ সালের জুলাই মাসে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক নিযুক্ত হন। ১৯১৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রমেশচন্দ্র মজুমদারের ‘Corporate life in Ancient India’ শীর্ষক পি-এইচ.ডি অভিসন্দর্ভ প্রকাশ করে। ১৯২১ সালের জুলাই মাসে তিনি নবস্থাপিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯২৪ সালে Early History of Bengal নামক তাঁর ছোট একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। Outline of Ancient Indian History and C...

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব কতটা 'বৈপ্লবিক' ছিল? লেখক: সুমন্ত ঘোষ

ইউরোপের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব যে কত দূর পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মূলত এই সময় মানুষের সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনা ও অনুসন্ধিতসা সত্বেও বিজ্ঞানচেতনা যে সবক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে পেরেছিল তা বলতে একটু দ্বিধা বোধ হয়। কারণ এইসময় বৈজ্ঞানিকগন জগৎ ও বিশ্বভ্রম্মান্ড নিয়ে আলোচনা করলেও তারা সেগুলির যুক্তি পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে অনেক সময় অক্ষম হতেন। তবে উল্লেখ করা দরকার গ্যালিলিও, কোরারনিকাস- এ সম্বন্ধে কিছু যুক্তি পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে অবশ্যই সক্ষম হয়েছিলেন।  বৈজ্ঞানিক বিপ্লব 'বৈপ্লবিক' পর্যায়ে রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমরা আরেকটা বাধা লক্ষ্য করতে পারি, সেটা হলো বৈজ্ঞানিকগণের অনেকাংশই জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর গুরুত্বারোপ করত। তারা মনে করত জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান ছিল প্রায় সমর্থক। মূলত এই ধারণাই বৈজ্ঞানিক বিপ্লবকে বৈপ্লবিক ধারায় রূপান্তরের পরিপন্থী ছিল। তবে এক্ষেত্রে আমরা একজন ব্যতিক্রমী মনীষীকেউ দেখতে পারি যিনি তার আবহাওয়া সংক্রান্ত তত্ত্ব দ্বারা এই ভ্রান্ত জ্ঞান অর্থাৎ জ্যোতিষশাস্ত্রের অসারতার দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করেছিলেন। ইনি আর কেউ নন, ইনি হলেন রেনেসাঁ...

রামমোহন রায়

রামমোহন রায় (মে ২২, ১৭৭২ – সেপ্টেম্বর ২৭, ১৮৩৩) প্রথম ভারতীয় ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালি দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্মীয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তিনি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন, সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য। তখন হিন্দু বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে যেতে বা আত্মহুতি দিতে বাধ্য করা হত। রামমোহন রায় কলকাতায় আগস্ট ২০, ১৮২৮ সালে ইংল্যান্ড যাত্রার আগে দ্বারকানাথ ঠাকুরের সহিত ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এই ব্রাহ্মসমাজ এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন এবং বাংলার পুনর্জাগরণের পুরোধা হিসাবে কাজ করে। মে ২২,১৭৭২ সালে হুগলী জেলার রাধানগর গ্রামে রামমোহন রায় জন্মগ্রহণ করেন এক সম্ভ্রান্ত কুলীন (বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রাহ্মণ বংশে)। তাঁর বংশে অদ্ভুত বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যায়। প্রপিতামহ কৃষ্ণকান্ত ফারুখশিয়ারের আমলে বাংলার সুবেদারের আমিনের কার্য করতেন। সেই সূত্রেই বোধ করি এদের 'রায়' পদবীর ব্যবহার। কৃষ্ণকান্তের কনিষ্ঠ পুত্র ব্রজবিনোদ রামমোহনের পিতামহ। পিতা রামকান্ত। রামকান...

কলকাতা-হাওড়া ব্রিজ লেখক: সিরাজুল ইসলাম

উনিশ শতকের সেতু প্রকৌশল ও প্রযুক্তির অন্যতম নিদর্শন। হাওড়া ব্রিজ নামে বহুল পরিচিত। ১৮৭১ সালে বাংলা সরকারের আইন বিভাগ হাওড়া ব্রিজ আইন পাশ করে (১৮৭১ সালের ৯ নং আইন)। এ আইনে লেফটেন্যান্ট গভর্নরকেকলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে হুগলি নদীর উপর আর্মেনিয়ান ঘাট বা তার আশেপাশে সরকারি অর্থায়নে একটি ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল ও গমনাগমনের জন্য পথ তৈরি ও সংরক্ষণ এবং নির্দিষ্ট হারে টোল আদায় করার ক্ষমতাও তাঁকে প্রদান করা হয়।প্রখ্যাত ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার ব্র্যাডফোর্ড লেসলের সাথে এই ব্রিজের পরিকল্পনা, নক্সা ও বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি সম্পাদন করা হয়। কারিগরি কারণে ব্রিজের কিছু অংশ ইংল্যান্ডে তৈরি হয় এবং জাহাজে করে কলকাতা নিয়ে এসে তা প্রকল্প স্থানে জুড়ে দেওয়া হয়। ১৮৭৪ সালে সমাপ্ত এ ব্রিজটি তখন পর্যন্ত বাংলা ও ভারতে তৈরি সর্ববৃহৎ ভাসমান অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হতো। নির্মাণের সময় ১৮৭৪ সালের ২০ মার্চের প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ে ব্রিজের একটি অংশ বিধ্বস্ত হয়। ঈগেরিয়া নামের একটি স্টিমারের নোঙর ছিঁড়ে ব্রিজের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে এবং ব্রিজের তিনটি পন্টুন ক্ষতিগ্রস...

ধর্ষনের প্রতিকার লেখক: গুড্ডু দেবনাথ

চিৎকার কর মেয়ে যতদুর শোনা যায় তোর  রক্তাক্ত বিবর্ণ  বিবস্ত্র শরীরে ধর্ষনের চিহ্ন দেখা যায়।  লেলিহান হিংস্র কামুক পুরুষতন্ত্রের বর্বর আক্রমণ    ধর্ষক, সেই পুরুষ কি জানে নারী হতেই তাদের জনম।        উদভ্রান্ত চোঁখ, ঢাকা মুখ, চুল এলোমেলো    যন্ত্রনায় কাতর, দিকভ্রান্ত, তুই  নিজেকে-ই মেরে ফেল।  মোমবাতী হাতে চল এক সাথে চলেভাষন মিছিলে মাঠেঘাটে      জ্বোরে মাইক বাজে, গান বাজে তবু ধর্ষনচলে প্রতিরাতে।      নেইযে কোন প্রতিবাদ আছো চেয়ে আজ পুরুষের মুখপানে      তাঁরা বুঝি দিবে নিরাপত্যা আশ্রয়,ভালোবাসা বিশ্বাসের প্রতিদানে। হায় রে বোকা মেয়ে বলিহারি তোদের অফুরন্ত ভালোবাসা  মুক্তমালা বানরে কি চিনিবে? একি তোদের অকল্পনীয় আশা।    জেগে ওঠো মেয়ে এই সংসারে নিজেকে প্রতিহত কর নিজ পায়ে দাড়িঁয়ে অনধীন হয়ে নিজেকেইতুলে ধর।      “মা” তুই শক্তি,  তুই জননী, তোর আছে অসংখ্য রুপ তোরচেয়ে অধিক শক্তি আর কার আছে তুই যে অপরুপ। জন্মমুহূর্তের জীবন যুদ্ধে ত...

কলকাতা দাঙ্গা বা প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস (The Great Calcutta Killing বা Direct Action Day). লেখক: সুরঞ্জন দাস

কলকাতা দাঙ্গা, ১৯৪৬  : ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতায় সংঘটিত একটি ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। এ সহিংসতা ভারতের হিন্দু ও মুসলমান দুটি বৃহৎ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান ঘৃণা ও অবিশ্বাস থেকে সৃষ্টি হয়েছিল। মুসলিম লীগের পাকিস্তান দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্টকে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। উপমহাদেশের সর্বত্র মুসলমানগণ ওই দিন সকল কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে, হিন্দু জনমত পাকিস্তান-বিরোধী শ্লোগানকে কেন্দ্র করে সুসংগঠিত হতে থাকে। বাংলার কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ তেমন একটা হিন্দু সাম্প্রদায়িক ছিলেন না। কিন্তু যেহেতু দলের অধিকাংশ সমর্থক ছিল হিন্দু, তাই কংগ্রেস সদস্যদের একটি অংশ পাকিস্তান আন্দোলনকে আসন্ন বিপদ হিসেবে উপলব্ধি করে হিন্দুদের একাত্মতা বিষয়ে প্রবল অনুভূতি প্রকাশ করার প্রয়াস পায়। তাদের প্রচারণা নিঃসন্দেহে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের বিরুদ্ধে হিন্দুদের চেতনাকে প্রজ্বলিত করেছিল। বিশেষত লীগ মন্ত্রিসভা ক্ষমতায় থাকার কারণে ওই দিবস বাংলায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ১৬ আগষ্ট ভোরে উত্তেজনা শুরু হয় যখন লীগের স্বেচ্ছাসেবকেরা উত্তর কলকাত...

চানক্য-পণ্ডিতের কৌটিল্য-তত্ত্ব ইতিহাসের টেরাকোটায় লেখক: রণদীপম বসু

‘মন খাঁটি হলে পবিত্র স্থানে গমন অর্থহীন।’ এই দুর্দান্ত উক্তিটির বয়স দু’হাজার বছরেরও বেশি, প্রায় আড়াই হাজার বছর। এটা চানক্য-শ্লোক বা বাণী। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কথাটা কতোটা বিশ্বাসযোগ্য ? যদি বলি এর বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্য ? একযোগে হামলে পড়বেন অনেকেই। বিশ্বাসযোগ্যই যদি না হবে তো আড়াই হাজার বছর পেরিয়ে এসেও কথাটা এমন টনটনে থাকলো কী করে ! আসলেই তা-ই। কথাটায় একবিন্দুও ফাঁকি দেখি না। হয়তো আমরাই মানি না বলে। অথবা অক্ষরে অক্ষরে এতোটাই মেনে চলি যে, জানান দেবার আর বাকি থাকে না- আমাদের মনটাই ফাঁকি, ওখানে খাঁটি বলে কিছু নেই। আর এজন্যেই কি পবিত্র স্থানে গমনের জন্য হুমড়ি খেয়ে আমাদের মধ্যে এমন হুড়োহুড়ি লেগে যায় ? অসুস্থ হলে যেমন আমরা হন্যে হয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটি, এটাও সেরকম। খোশগল্প করার নিয়ত না হলে সুস্থাবস্থায় কেউ কি ডাক্তারের কাছে যান ! চানক্যের আরো কিছু বাণী- "বিষ থেকে সুধা, নোংরা স্থান থেকে সোনা, নিচ কারো থেকে ভালো এবং নিচু পরিবার থেকে শুভ-লক্ষণা স্ত্রী- এসব গ্রহণ করা সঙ্গত।” "মনের বাসনাকে দূরীভূত করা উচিত নয়। এই বাসনাগুলোকে গানের গুঞ্জনের মতো কাজে লাগানো উচিত।” ...